অনুসন্ধান ডেস্ক
প্রকাশ : Aug 11, 2025 ইং

দেশের জ্বালানি খাতে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

দেশের জ্বালানি খাতে প্রতিদিনই কমছে গ্যাসের মজুদ, বাড়ছে না বিদ্যুৎ সঞ্চালনের পরিমাণ—এমন অভিযোগ তুলে আগামীতে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

রবিবার (১০ আগস্ট) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫’ শীর্ষক সেমিনারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ম. তামিম বলেন, সরকার জ্বালানি খাতের বকেয়া শোধ করতে সক্ষম হলেও ভর্তুকি কমাতে পারেনি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি।

পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে, যেখানে চাহিদা ৩৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ ২০২৫ সালে গ্যাসের অভাব বেড়ে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়াবে—যা আগামীতে আরও বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তামিম।

তিনি বলেন, “২০৩৫ সালে পেট্রোবাংলা গ্যাস মজুদের পরিমাণ ধরেছে ৪০০০ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ তারা ধরে নিয়েছে দেশে আর নতুন করে গ্যাসের মজুদ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যেখানে জ্বালানির ৭০ শতাংশ গ্যাস নির্ভরশীল, সেখানে গ্যাসের এ অভাব অত্যন্ত শঙ্কাজনক।”

বিদ্যুতের বিষয়ে তামিম জানান, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট হলেও সঞ্চালন সক্ষমতা ১৬ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট, যেখানে সঞ্চালন হয় প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট। ২০৩০ সাল অর্থাৎ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে ২৬ হাজার মেগাওয়াটে। অল্প সময়ের মধ্যে সঞ্চালন সক্ষমতা বাড়াতে না পারলে ভুগতে হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।

জ্বালানি বিষয়ে একই শঙ্কা ব্যক্ত করে আরেক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এজাজ হোসেন বলেন, “বর্তমানে প্রতি ঘনফুট গ্যাসের দাম ৩০ টাকা; সেই দিন দূরে নয় যখন ১০০ টাকা খরচ করলেও এক ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে না।”

অনেকে বলেন, আমদানি করে গ্যাস আনা হবে; কিন্তু যেসব পাইপলাইন রয়েছে সেগুলো ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অথবা ভঙ্গুর। তাই ইচ্ছামতো আমদানি করে গ্যাস আনা যাবে না বলে মনে করেন তিনি।

অভিযোগ করে জানান, যাকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাকে অতিরিক্ত আরও দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। এতে কাজের চাপ বেড়েছে এবং অগ্রগতি হয়নি। এক বছরে এত বড় মন্ত্রণালয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আসেনি, এমনকি পরিবর্তন আনতে দৃশ্যমান কোনো চেষ্টাও করা হয়নি।

জ্বালানি সংকটের কারণে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “প্রতিটি মিল মালিক জ্বালানি সংকটে ভুগছে। একদিকে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন বন্ধ, অন্যদিকে ব্যাংকের উচ্চ সুদহার—সব মিলিয়ে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।”

জ্বালানি পরিকল্পনার অভাব প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, “সরকার এক এক সময়ে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম এক একভাবে নির্ধারণ করে। দেশে কোনো নীতির স্থায়িত্বের গ্যারান্টি নেই।”

তিনি বলেন, সরকারে জ্বালানি খাতে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া উচিত। এতে ব্যবসায়ীরাও সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেদের রূপরেখা সাজাতে পারবেন।

-ইউএনবি

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

'উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হব

1

বাংলাদেশে ধর্ম, জাতি ও গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না:

2

রক্তদান সমাজে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে : ধর্ম উপদেষ্টা

3

বাংলাদেশ থেকে ৪০০ গাড়ি চালক নেবে আরব আমিরাত, বাছাই পরীক্ষার

4

আল্লাহ ও মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর পোস্ট: কলেজছাত্র আট

5

জুলাই সনদ পর্যালোচনা: মতামত দিয়েছে বিএনপি, এনসিপিসহ ২৩ টি দল

6

মাই টিভির চেয়ারম্যান ও তৌহিদ আফ্রিদির বাবা নাসির উদ্দীন গ্রে

7

৩১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম ভ্যাকসিন ও এন্টিভেনাম উৎপাদ

8

দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান

9

সবজি বাজারে আগুন, ঊর্ধ্বমুখী প্রতিটি পণ্যের দাম

10

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি খুঁজতে আলোচনা শুরু ঐকমত্য কমিশনের

11

দেশের জ্বালানি খাতে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

12

অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান তারেক রহমান

13

দেশের বাইরে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে সরকার: প্

14

শাপলা চত্বরে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবে

15

৩০০ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

16

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ৭ দফা প্রস্তাব

17

গাজায় নতুন আক্রমণের পরিকল্পনা

18

'জুলাই বিপ্লবে সাহসের উজ্জ্বল প্রদীপ হয়ে জ্বলে উঠেছিল আবু সা

19

পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট

20